শব্দদূষণের ফলে মানুষের শরীরে এবং অন‍্যান‍্য প্রানীর ওপর কী কী ক্ষতিকারক প্রভাব বিস্তার করে.

শব্দদূষণের(Noise pollution) ফলে মানুষের শরীরে এবং অন‍্যান‍্য প্রানীর ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব বিস্তার:-

শব্দদূষণ(Noise pollution):- উচ্চ প্রাবল‍্যের ও উচ্চতীব্রতাবিশিষ্ট সহনসীমার ঊদ্ধের সুরবর্জিত কর্কশ শব্দ দ্ধারা পরিবেশে এবং মানবদেহের ক্ষতিকর ও অবাঞ্ছনীয় পরিবর্তনকে শব্দদূষণ বলা হয়। যে যন্ত্রের সাহায্যে শব্দদূষণ পরিমাপ করা হয় তার নাম হল, ডেসিবেল বা dB (বিঞ্জানী গ্রাহাম বেল-এর নামানুসারে) এই যন্ত্রের নাম করন করা হয়।


◆শব্দদূষণের একটি অন‍্যতম কারণ হল যানবাহন:- জনসংখ‍্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শহরাঞ্চলে যানবাহনের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে যানবাহন থেকে শব্দদূষণও দিনের পর দিন বাড়ছে। ট্রাক, মোটর, বাস, রেল, এরোপ্লেন, সুপারসনিক জেট চলাচলের সময়ে যে শব্দ সৃষ্টি হয়, তা শব্দদূষণ সৃষ্টি করে। WHO-এর রিপোর্ট অনুসারে ট্রাফিক শব্দ(হর্ন, গাড়ি চলাচল) হল বায়ুদূষণের পরে দ্ধিতীয় সর্বাধিক দূষণকারক। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ (CPCB বা Central Pollution Control Board) যানবাহনজনিত শব্দদূষণ মাএা 70 dB নির্ধারণ করলেও,বহু শহরে শদ্বের মাএা অনেক বেশি।

◆শব্দদূষণের আরও একটি বড়ো কারণ হল বিভিন্ন শিল্প, কলকারখানা:- বিভিন্ন কলকারখানায় দ্রব‍্য উৎপাদনে ব‍্যবহৃত যন্ত্রপাতি থেকে সৃষ্ট আওয়াজ মারাত্মক শব্দদূষণ ঘটায়। ভারতে শিল্পক্ষেএে 8ঘন্টায় গড়ে সর্বাধিক 90 dB শব্দ সহনমাএা বলে নির্ধারিত। কিন্তু জাহাজ, বিমান নির্মাণ,কাঠের মিল,খাদ‍্য উৎপাদন শিল্প,আসবার নির্মাণ শিল্প,ধাতব পণ‍্য উৎপাদন শিল্পে এই সহনমাএার থেকে অনেক বেশি প্রাবল‍্যের শব্দ উৎপন্ন হয়। এর ফলস্বরূপ মারাত্মক শব্দদূষণ ঘটে।

এ ছাড়াও বর্তমানকালে শব্দদূষণের অন‍্যতম কারণ হল শব্দবাজি ও লাউডস্পিকারের অযাচিত ব‍্যবহার। আবার, প্রাকৃতিক কারণে যেমন, বজ্রবিদ‍্যুতও শব্দদূষণ ঘটিয়ে থাকে।

◆শব্দদূষণের ফলে মানুষের শরীরের ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব:-  শব্দদূষণ মানুষের শ্রবণ ক্ষততা এবং হৃৎপিণ্ডের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। (1) কানের ওপর প্রভাব: দীর্ঘ-দিন উচ্চশব্দ (100 dB)-র কারণে অন্তঃকর্ণের অর্গান অফ কর্টি ( শ্রুতিযন্ত্র )-র রোমকোশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে শ্রবণ ক্ষমতা হ্রাস পায় বা বিনষ্ট হয়। একে 'নয়েস ইনডিউর্স ড হিয়ারিং লস' ( NIHL ) বলে। NIHL দু-ভাবে মানুষের ক্ষতি করে---[A] অতি উচ্চ প্রাবল‍্যের শব্দ এককালীন আচম্বিতে শুনলে অন্তঃকর্ণের ককলিয়া অংশের স্থায়ীভাবে শ্রবণ ক্ষমতা নষ্ট হয়, একে অ‍্যাকাউস্টিক ট্রমা বলে। যেমন---150 dB-এর ঊর্ধ্বে বাজির শব্দ, বিস্ফোরণ প্রভৃতি। [B] সাধারণ শব্দের থেকে উচ্চ প্রাবল‍্যের কোনৌ শব্দ (85 dB) অনবরত শুনতে থাকলে শ্রবণ ক্ষমতা ধীরে ধীরে হ্রাস পায়। (2) হৃৎপিণ্ডের ওপর প্রভাব:- উচ্চ প্রাবল‍্যের শব্দ হৃৎপিণ্ডের ক্ষতিসাধন করে। 

Comments

Popular posts from this blog

থ‍্যালাসেমিয়া রোগের জেনেটিক কাউন্সেলিং (Autosomal disease thalassemia and genetic counselling)

জীববৈচিত্র্যের হটস্পট(Biodiversity hotspot) কাকে বলে, ভারতের(India) হটস্পট অঞ্চল কত গুলো.

মানব বিকাশের বিভিন্ন দশা, 1) সদ‍্যজাত(Newborn), 2) শৈশব(Childhood), 3) বয়ঃসন্ধি (Adolescence), 4) পরিণত দশা (Mature), 5) বার্ধক‍্য বা অন্তিম পরিণতি দশ (Old age or late mature phase), Phases of human development.